মিতার ঈদ
আমি আর মিতা প্রথম দেখা করি চিরচেনা জায়গাটিতে। মিতার সঙ্গে আমার পরিচয়টাও বেশি দিনের না। আমরা ব্রিজের পাশেই বসি।
‘আপা পাঁচটা ট্যাকা দেন।’ পার্ক কিংবা লেকে এ রকম টাকা চাওয়া কমন ব্যাপার। কিন্তু এ রকম ধরাবাঁধা টাকা চাওয়া দেখে ফিরে তাকাই। চার বছরের পিচ্চি একটা মেয়ে। নাকে পিচ্চি একটা নাকফুল। আমি কিছু বলার আগেই মিতা তার সঙ্গে আলাপচারিতা শুরু করে দেয়।
কিছুক্ষণ পরেই আমরা সেখান থেকে চলে আসি। রিকশায় উঠে মিতা রিকশাওয়ালাকে নিউমার্কেট যেতে বলে। আমি বলি, ‘নিউমার্কেট কেন?’ ‘তুমি আমাকে আজ শপিং করে দেবে তাই’। আমি একটু থতমত খেয়ে যাই। শপিং করার কোনো প্রস্তুতি ছিল না। নিউমার্কেটে গিয়ে মিতা ওর মতো করে শপিং করে। আমি নীরব দর্শকমাত্র । আমি ওকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে নিজের কাজে ফিরি। ফেরার পথে শুভমিতার কিছু কথা মাথার ভেতর ঘুরতে থাকে। হঠাৎ মোবাইলে একটি মেসেজ আসে, ‘শুক্রবারে মিস কোরো না। অবশ্যই ওইখানে থেকো, ঠিক ১০টায়। আমি ওকে থাকতে বলেছি।’ মিতা লেকে টাকা চাওয়া সেই ছোট্ট মেয়েটির কথা বলে, মেয়েটির নাম মনি।
শপিং করার সময় মনির জন্যও জামা কিনেছে মিতা। শুক্রবারে সেটা পৌঁছে দেবে। তারই মেসেজ পাঠিয়েছে। পরে জানতে পারি এক মনি না। প্রতি ঈদে নিজের শপিংয়ের টাকা বাঁচিয়ে এ রকম তিনজনের জন্য ঈদের জামা কেনে ও।
২০ জুলাই ২০১৪ প্রথম আলোয় প্রতাশিত
No comments