Header Ads

Header ADS

স্বাধীনতা


শুভ তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। একদিন বিকেলবেলা শুভ হাঁটছিল। হঠাৎ তার চোখ পড়ল মাঠে। সেখানে মানুষের একটা জটলা হয়ে আছে। শুভ এগিয়ে যায়। কেউ একজন আবৃত্তি করছে। যতটুকু শুনতে পারল তা হলো, ‘সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’ হঠাৎ লোকটি উঠে দাঁড়ালেন। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ছুটলেন মোটরবাইকে চড়ে।
তখন ছিল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। লোকটি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের কবিতা, গল্প, চিঠি পড়ে শোনাচ্ছিলেন। মোটরবাইক নিয়ে ঘুরছেন আর সবাইকে বলছেন মুক্তিযুদ্ধের কথা।
তিনি চলে যাওয়ার পর পরই শুভ চলে আসে বাড়িতে। তার বাবা তখন কাজ করছিলেন। মায়ের কাছে জানতে চাইল,
‘মা, স্বাধীনতা কারে কয়?’
‘এসব তর বুঝন লাগবো না। যা পড়বার বয়। বড় অইলে সব বুঝবি।’
মাথা নিচু করে, মন খারাপ করে শুভ যায় তার বাবার কাছে।
‘আব্বা, স্বাধীনতা কী?’
‘কামের সময় আইছে স্বাধীনতা নিয়া। স্বাধীনতার কী কই, যা ইনথিক্যা। পড়াশোনার নামে ঠনঠনা...।’
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। বাবার কাছ থেকে বকা খেয়ে, শুভ পুকুর থেকে হাত-পা ধুয়ে এসে পড়তে বসে। পড়তে থাকে, ‘আমাদের দেশ বাংলাদেশ...।’
কিন্তু তার মাথার ভেতর ঘুরতে থাকে স্বাধীনতা।
রাতে শুভ মা-বাবার সঙ্গে ঘুমায়। প্রতিদিন বাবার বুকে মাথা রেখে ঘুমায়। সেদিন সে ঘুমিয়েছিল মায়ের পাশে। তার বাবা তাকে টেনে বুকে নেন। বাবা ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন।

২১ ডিসেম্বর ২০১৪ প্রথম আলোতে প্রকাশিত
Powered by Blogger.